স্বদেশ ডেস্ক:
গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস জানিয়েছে, ইসরাইল যদি আগাম সতর্কতা ঘোষণা না করে গাজা উপত্যকায় বোমা হামলা চালায়, তবে তারা যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করবে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা ইজেদ্দিন আল-কাসাম বিগ্রেডের এক বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি জানায়, ‘হুঁশিয়ারি না দিয়ে আমাদের জনগণের ওপর প্রতিবার টার্গেট করা হয়ে প্রতিবার একজন করে বেসামরিক যুদ্ধবন্দীকে হত্যা করা হবে।
তিনি বলেন, ‘শত্রু মানবতার ভাষা, নীতি-নৈতিকতা বোঝে না। ফলে আমরা তারা যে ভাষা বোঝে, সে ভাষাতেই কথা বলব।’
হামাস এবং গাজাভিত্তিক আরেক সংগঠন ইসলামিক জিহাদ প্রায় ১৩০ ব্যক্তিকে ইসরাইল থেকে ধরে আনার দাবি করেছে। তারা দাবি করছে, এরা পণবন্দী নয়, বরং যুদ্ধবন্দী। এদের মধ্যে সৈন্য, বেসমারিক নারী, পুরুষ ও প্রবীণ ব্যক্তি রয়েছে।
এদিকে ইসরাইল অব্যাহতভাবে গাজায় বোমা ও গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে। তারা ইতোমধ্যেই গাজাকে পুরোপুরি অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। গাজায় কোনো ধরনের খাবার, বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ না করার কথা ঘোষণা দিয়েছে।
ইসরাইল জানিয়েছে যে তারা গাজায় হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে, তবে ওই হামলায় বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজার দুটি শরণার্থী শিবির- আল-শাতি (বিচ ক্যাম্প নামেও পরিচিত) এবং জাবালিয়া ক্যাম্পে- ইসরাইল বিমান হামলা চালিয়েছে, এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
জাবালিয়া থেকে অনলাইনে শেয়ার হওয়া এক ভিডিওতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা হতে দেখা যায়, যার মধ্যে একজন ব্যক্তির লাশ নিয়ে যেতে দেখা যায় যা রক্ত ও ধুলোয় ঢেকে ছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে গাজায় জাতিসংঘের একটি স্কুলে বিমান হামলা চালানো হয়েছে যেখানে শিশু ও বৃদ্ধসহ শত শত বেসামরিক মানুষ অবস্থান করছিল।
জাতিসংঘ হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, স্কুলটি ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’, কিন্তু এতে কেউ নিহত হয়নি।
একটি মসজিদের পাশাপাশি বাড়িঘরও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের মতে, গাজার দক্ষিণে রাফাহ শহরে হামলায় একই পরিবারের ১৯ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ সোমবার জানিয়েছে, গাজার এক লাখ ২৩ হাজার ৫৩৮ জন মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই ‘ভয়, নিরাপত্তার আশঙ্কা এবং তাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কারণে’ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।।
জাতিসঙ্ঘ মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ আরও জানায়, বাস্তুচ্যুত মানুষদের মধ্যে ৭৩ হাজার মানুষকে আশেপাশে স্কুলে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা, বিবিসি, এএফপি এবং অন্যান্য